আপনার পূর্ব পুরুষের দাড়ি কেমন ছিল সেটার উপর ভিত্তি করে আপনার দাড়ি হবে। কোন উপায় অবলম্বন করে দাড়ি বাড়ানো যায় না। মানুষের শরীরের প্রতিটা বৈশিষ্টের জন্য এক একটা জিন দায়ী। আর দাড়ির জিন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মায়ের বংশ থেকে আসে। কাজেই আপনার নানা বা মামার মত আপনার দাড়ি হতে পারে। তবে আপনার বাবার জিন যদি প্রকট হয় তাহলে আপনার বাবা বা দাদার মত আপনার দাড়ি হবে। কোন খাবার খেয়ে বা ঔষধ খেয়ে দাড়ি ঘন করা যায় না। এটা বংশগত এবং হরমোন ঘটিত ব্যাপার। তবে অনেকে বলেন ঘন ঘন দাড়ি কামালে বা শেভ করলে এবং উলটা ভাবে ব্লেড টানলে দাড়ি ঘন হয়। এটা কতটা কার্যকর বা ফলপ্রসূ তা আপনার উপর নির্ভর করবে।
সাধারণত বয়সন্ধিকালের বা বয়সন্ধিকালোত্তীর্ণ ছেলেদের মুখে দাড়ি গজায়। একজন পুরুষের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স সাধারণত ১২ থেকে ১৫ বছর অর্থাৎ এই বয়সেই ছেলেদের শরীরে অনেক পরিবর্তন হয়ে থাকে, যার একটি হচ্ছে মুখে দাড়ি-গোঁফ ওঠা। এক্ষেত্রে পুরুষ হরমোন টেস্টস্টেরনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে তরুণদের মুখে একটি প্রশ্নই বারবার ঘুরপাক কাচ্ছে সেটি হল, বয়স তো অনেক হল আমার তাহলে মুখে দাঁড়ি গজায় না কেন? কারন হচ্ছে, এন্ড্রোজেন নামক হরমোন আছে আর এই হরমোনের কাজ হচ্ছে মুখে দাড়ি বুকে লোম গজানো এবং কণ্ঠস্বর ভারি করে তোলা। এন্ড্রোজেন ক্ষরণ না হলে মুখে দাড়ি উঠবে না। এটি একটি শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তবে আপনার বয়স যদি হয় ১৭ বছর এর কম সেক্ষেত্রে দাঁড়ি গজানোর সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। এমনও হতে পারে কারও কারও কিছুটা বয়স হলে পরে দাঁড়ি গজায়। এক্ষেত্রে আপনি নিম্নে দেওয়া কিছু টিপস অনুসরণ দেখতে পারেন এছাড়া একজন ভাল হরমোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। ১। নারিকেল তেল, আমলকীর তেল, রেড়ীর তেল দ্রুত দাড়ি গজাতে সাহায্য করে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট তেল দিয়ে মুখ ম্যাসাজ করুন। এরপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। অথবা রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ম্যাসাজ করে তেল নিয়েই ঘুমিয়ে পরুন। আর রেড়ীর তেল কে ইংরেজিতে ক্যাস্টর অয়েল বলে।। ক্যাস্টর অয়েল সাধারাণত সুপার সপ গুলো ছাড়া পাওয়া যায়না। একেত্রে মুদি দোকানে না গিয়ে সোজা সুপার সপে চলে যান। তারাতারি দাড়ি গজানোর ঘরোয়া উপায় ২। দাড়ি ভালোভাবে এবং তারাতারি গজানোর জন্য ঘুম খুবই জরুরি। ঘুম ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে পুনর্গঠনে সাহায্য করে দ্রুত দাঁড়ি গজাতে সাহায্য করে। ৩। বাহির থেকে ফিরে ফেইসওয়াস দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন । আর সপ্তাহে অন্তত একবার স্ক্রাব ব্যবহার করুন । কারন, স্ক্রাব ত্বকের গভীরের ময়লা সহজেই তুলে আনে এবং স্ক্রাবের ভেতরের দানাদার উপাদান সহজেই মুখের ত্বকে থাকা মৃত কোষ সরিয়ে নতুন দাঁড়ি গজাতে সাহায্য করে ৪। প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকায় যোগ করুন। ডিম, মাছ, মাংস, বাদাম ইত্যাদি ইত্যাদি এককথায় যদি মুখে দারি দ্রুত উঠাতে চান তাহলে প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খেতেই হবে। এগুলা মুখে দাড়ি দ্রুত গজাতে সাহায্য করবে। এবং কিছু ভিটামিন এবং মিনারেলও দাড়ি তারাতারি উঠাতে সাহায্য করে। খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই-সমৃদ্ধ খাবার রাক্তে ভুলবেন না। ৫। চিন্তা, মানসিক চাপ কম থাকলে মুখে দাড়ি দ্রুত গজায়। চিন্তা, মানসিক চাপ থাকলে সেক্ষেত্রে, আপনি ধ্যান করে বা যোগব্যায়াম করে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করতে পারেন। ৬। গনগন সেব করলে দাড়ি কিছুটা তাড়াতাড়ি উঠে ও শক্ত হয় ধারনাটি সম্পুর্ন ভুল। এটা একটা মিথ। এর বৈজ্ঞানিক কোন প্রমাণ নেই। বরং গনগন সেব করার কারনে দাড়ি্র গ্রোথ কমে যায়। দাড়ি বড় বা ঘন হয় না। আপনাকে যা করতে হবে সেটি হল, ছয় সপ্তাহ পর পর দাড়ি কাটতে হবে এবং নিয়মিত চিরুনি বা ব্রাশ দিয়ে আচড়াতে হবে যা রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দাড়ি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
টেস্টোস্টেরন হরমোন সমস্যার কারণে অনেকের প্রকৃত বয়সের পরে দাড়ি গোফ গজায় | তবে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পারিবারিক বা জন্মগত কারণেও দাড়ি-গোঁফ কারো কারো কম বা দেরিতে ওঠে | তাই চিকিৎসক কর্তৃক শারীরিক পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হতে হবে, আসলে হরমোন সমস্যার কারণে এমনটি হচ্ছে কি না | হরমোন সমস্যার কারণে হলে তার চিকিত্সা সম্ভব |